শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:১৬ পূর্বাহ্ন
ফচিকা ভূমি অফিসে দুর্নীতির মহোৎসব
নেত্রকোনা প্রতিনিধি :
নেত্রকোনা সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের ফচিকা ভূমি অফিসে ঘুষ ও দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র সামনে এসেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারি সেবা পেতে হলে নিয়ম নয়, নায়েব রফিকুল ইসলামের কথাই শেষ কথা। সেই কারণে এলাকাবাসীর কাছে তিনি এখন পরিচিত ঘুষ রফিক নামে।
ভূমি অফিসে নামজারি, পর্চা বা অন্য যে কোনো সেবা নিতে গেলে নির্ধারিত সরকারি ফি নয়, আগে ঘুষ— পরে কাজ, দীর্ঘদিন ধরেই এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
দশ হাজার টাকার বিনিময়ে নামজারি!
ভুক্তভোগী মো. রায়হান কবির জানান, তার নিজের জমির নামজারি করতে গিয়ে তিন ধাপে মোট ১০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। অথচ সরকারি ফি মাত্র ১,১৭০ টাকা।
তার ভাষ্য, নায়েবের কথায় বিশ্বাস করে টাকা দিয়েছিলাম। পরে বুঝলাম, পুরোপুরি ঠকেছি।
গণমাধ্যমকে একটি ভিডিওও দেখিয়েছেন তিনি, যেখানে নায়েব রফিকের নির্দেশে অফিস সহকারী রুহুল আমীনকে টাকা নিতে ও পরে ভাগ-বাটোয়ারা করতে দেখা যায় বলে দাবি করেন রায়হান।
অভিযোগ অস্বীকার, পরে ম্যানেজের চেষ্টা
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নায়েব রফিক প্রথমে সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। এরপর সাংবাদিকদের বিভিন্নভাবে ‘ম্যানেজ’ করার চেষ্টা চালান বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্রশাসনের নীরবতা
এ বিষয়ে এসিল্যান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ব্যস্ততার অজুহাতে ফোন কেটে দেন তিনি।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানান, নামজারির সরকারি ফি ১,১৭০ টাকা। এর বাইরে কেউ টাকা নিলে লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়দের ক্ষোভ
স্থানীয়দের দাবি— ফচিকা ভূমি অফিস এখন যেন সরকারি অফিস নয়, ঘুষখোরদের অফিস। কেউ নামজারি করতে গেলে প্রথমেই জানতে হয়, নায়েব কত চান।
সচেতন মহল বলছে, এভাবে দুর্নীতি চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের প্রশাসনের প্রতি আস্থা সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে যাবে। দ্রুত তদন্তপূর্বক ও দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।