সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন
চারঘাটে পদ্মায় পানি বৃদ্ধির তীব্র শ্রোতে নদী ভাঙ্গনে আতংক নদীপাড়ের মানুষ
চারঘাট (রাজশাহী )থেকে মোঃ শফিকুল ইসলাম
টানা বর্ষন ও পদ্মায় পানির তীব্র শ্রোতে চারঘাট উপজেলার নদী তীর বর্তী এলাকাগুলো ভেঙ্গে যাওয়ার আতংক বিরাজ করছেন নদীপাড়ে বসবাসরত মানুষেরা। গত কয়েক সপ্তাহে উপজেলার গোপালপুর, চন্দনশহর, পিরোজপুর এলাকার প্রায় কয়েক কিলোমিটার ফসল জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মধ্যে রয়েছে প্রাথমিক স্কুল, মসজিদ, রাস্তাসহ একাধিক বসতবাড়ি। আর প্রতিশ্রুতি নয় নদী ভাঙ্গন রোধে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্থায়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহন করার অনুরোধ করেন নদীপাড়ে বসবাসরত একাধিক স্থানীয় এলাকাবাসী।
গোপালপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেন (৬৫) জানান, স্বাধীনতার পরেও পদ্মা নদীটি চারঘাট উপজেলা গোপালপুর ও চন্দনশহর এলাকায় পদ্মা নদীটি ভারতের সাহেব নগর সীমানা দিয়ে প্রবাহিত হতো। কিন্তু কালের বিবর্তনে গত ৩৫ বছরে নদীর দিক পরিবর্তন হয়ে তীর ভাঙতে ভাঙতে এখন পুরোটাই বাংলাদেশ সীমানা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদী গর্ভে বিলীন হয়ে মানচিত্র থেকে উঠে গেছে চন্দন শহর নামের একটি মৌজা, গোপালপুর ও পিরোজপুরের অধিকাংশ এলাকা। গত এক বছরে তার নিজের ১০ বিঘাসহ প্রায় ২০০ বিঘা কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এবং নিঃস্ব হয়ে গেছে প্রায় শতাধিক ব্যক্তি বলে তিনি জানান।
চন্দন শহরের বাসিন্দা সিকেন্দার বলেন নদী ভাঙ্গন এখন আমাদের জীবনের স্থায়ী যন্ত্রনা হয়ে দাড়িয়েছে। আমাদের পরিবারের বসত ভিটা সহ প্রায় ৫০ বিঘা কৃষি জমি পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে চন্দন শহরের মতো গোপালপুর ও পিরোজপুর গ্রামও একদিন দেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে বলে তিনি মনে করেন।
শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় যে, চারঘাট পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড সংলগ্ন গোপালপুর গ্রাম ও চন্দন শহর সংলগ্ন প্রায় ১ কিঃ মিঃ দীর্ঘ এ নদী তীরের প্রায় এক’শ ফুট ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পাশাপাশি ফাটল কৃত এলাকাগুলো এত বড় আকার দেখা দিয়েছে যে কারনে হুমকির মুখে পড়েছে প্রায় ৩ কিমি জুুড়ে কয়েক’শ বিঘা কৃষি জমি। টানা বর্ষন, বাতাশ ও পানি প্রবাহ বৃদ্ধির ফলে কম থাকলেও প্রতিনিয়ত ভাঙ্গন অব্যহত রয়েছে। ভাঙ্গন ভয়ঙ্কর রুপ নেবার পূর্বে স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ করেন গোপালপুর নদীপাড়ের বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন।
মুঠোফনে যোগাযোগ করা হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড, রাজশাহীর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী পার্থ সরকার বলেন নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে প্রবল শ্রোত হচ্ছে। এ কারনে কিছু কিছু জায়গায় ভাঙ্গন দেখা দিতে পারে। তবে যতদ্রুত সম্ভব সরেজমিনে গিয়ে নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।