মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:৩৭ পূর্বাহ্ন
অথরাইজড অফিসার জোন—১/৩ মোহাম্মদ নুর আলম অনিয়ম দুর্নীতি করেও বহাল তবিয়তে
হৃদয় ইসলাম:
রাজউক নামক প্রতিষ্ঠানটির প্রতি সেবাগ্রহীদের আস্থা দিনের পর দিন কমে আসছে। দেয়ালে দেয়ালে ঘুষ চলছে। প্রতিষ্ঠানটির অনেক চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারি আছে যারা বিশাল বিশাল অট্টলিকা, প্রাইভেট কার ও মোটা অংকের ব্যাংক ব্যলেন্স এর মালিক। এদিকে বড় কর্তা ব্যাক্তিদের সম্পদের তো অভাব নেই। মাঝে মাঝে দুদকের জালে আটক হলেও দেনদরবার করে আবার জাল থেকে বেড়িয়ে যায়। প্রশ্ন হলো কিভাবে এসব সম্পদ তারা গড়ে তুলছেন। উত্তর খুবই সহজ। সবাগ্রহীদেরকে জিম্মি করে এসব সম্পদ গড়ছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে এ পর্যন্ত বহুবার গণশুনানী হচ্ছে। কিন্তু থামছে না রাজউকে সেবাগ্রহীদের হয়রানি। ঘুষ ছাড়া রাজউকে কাজ হয় না। অনেক ক্ষেত্রে প্যাকেজ ঘুষ দিতে হয় কাজ আদায় করার জন্য। রাজউকের অথারাইজড অফিসার মোহাম্দ নুর আলম। তিনি জোন—৭/১ এবং জোন ৭/২ তে কর্মরত থাকা অবস্থায় অনিয়ম দুর্নীতির পাহাড় গড়ে গেছেন। গেন্ডারিয়, ধুপখোলা, মিরহাজিরবাগ, সদরঘাট, যাত্রাবড়ির শহিদ ফারুক সড়ক রোড ইত্যাদি এলাকায় অসংখ্য ভবন রাজউকের নকশা ভঙ্গ করে নির্মিত হয়েছে তার আমলে। অনিয়মিত ভবনগুলো নির্মান কাজ শেষ করে অদ্য পর্যন্ত বহাল তবিয়তে আছে। অনিয়মিত যেসব ভবন থেকে টাকা দেওয়া হতো তাদের ভবন সুরক্ষা করতেন। অপরদিকে টাকা না দিলে তিনি নিজের খেয়াল খুশি মতো যে কোন ভবনে অভিযান করে দেয়াল ও কার্ণিশ ভেঙে দিতেন বলে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে। গেন্ডারিয়া এলাকায় একই সময় ১০ টি বহুতল ভবন নির্মানের সময় কোন ভবনের সামনে নির্মান সংক্রান্ত সাইনবোর্ড ছিল না। অথচ রাজউক এর নিয়ম অনুযায়ী বহুতল ভবন নির্মানর ১৫ দিন আগে ফরম—৭ পূরণ করে নির্মানাধীন ভবনের সামনে ৩ ফুট/৫ফুট আকারের সাইনবোর্ড টাঙানো থাকতে হবে এবং উক্ত সাইনবোর্ডে রাজউক অনুমোদিত নকশা নম্বর, ভবনের ঠিকানা এবং নির্মান সংক্রান্ত সকল তথ্য প্রদর্শিত থাকবে। অথরাইজড অফিসার নুর আলমের প্রশ্রয়ে ভবন মালিকগণ ১০ টি ভবনের কোনটিতেই উক্ত সইবোর্ড টাঙান নাই। এর পেছনে উদ্দেশ্য ছিল ভবনগুলোর ঠিকানা যাতে গণমাধ্যম কর্মীরা দেখতে বা জানতে না পারে। এসব এলাকা ঘুড়ে ও এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। নকশা ভঙ্গ করে এসব ভবন নির্মানে তিনি সহযোগিতা করেছেন মর্মে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। আবার নানা অজুহাতে নির্মান কাজ বন্ধ করে সহকারীর মাধ্যমে যোগাযোগ করে সমঝোতার জন্য চাপ দিতেন তিনি। ‘বিশেষ ব্যবস্থায়’ ১০ তলা ভবনকে ১২ তলা পর্যন্ত করার সুযোগ করে দিয়েছেন তিনি। পুরাণ ঢাকায় রুপকথা হাউজিং নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: ইকবাল লিটন অথরাইজড অফিসার মেহাম্মদ নুর আলমের বিরুদ্ধে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছেন বলে রাজউক সূত্রে প্রকাশ। অভিযোগ থেকে জানা যায় ৫৯ ও ৫৯/১ সুভাষ বোস এভিনিউ, লক্ষিবাজার, ঢাকা ঠিকানায় দশ তলা ভবন নির্মানে নকশা অনুমোদনের জন্য আবেদন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক। নুর আলম নকশা অনুমোদনে কাল ক্ষেপন করতে থাকেন এবং এক পর্যায়ে ২৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। বিষয়টি দুদককে জানানো হলে দুদকের সহকারী পরিচালক মো: আমির হোসেন তদন্ত করেন। রাজউকের একাধিক ইমারত পরিদর্শক ও কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান মোহাম্মদ নুর আলম শত কোটি টাকার মালিক যা তার আয়ের সাথে সংগতিহীন। এই ব্যাপারে অথরাইজড অফিসার মোহাম্মদ নুর আলমের বক্তব্য নেওয়ার জন্য তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হন নাই। বর্তমানে তিনি রাজউক জোন ১/৩ এ কর্মরত আছেন।