শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:
বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে বন্দর পরিচালনা তুলে দেওয়া এবং রোহিঙ্গাদের জন্য স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণের নীতিগত অনুমোদনের সিদ্ধান্তকে জাতীয় স্বার্থবিরোধী ও স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্বের জন্য হুমিকর বলে আখ্যায়িত করেছে মুক্তিজোট।
২০ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে সংগঠন প্রধান আবু লায়েস মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজামাল আমিরুল এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, চট্টগ্রামের লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল প্রকল্প এবং ঢাকার কাছে পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি দুই প্রতিষ্ঠানের হাতে ১০ বছর মেয়াদে ১০০ শতাংশ করমুক্ত সুবিধাসহ হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত কোনভাবেই যৌক্তিক নয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দর কেবল বাণিজ্যিক প্রবাহ নয়—জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্বের সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এমন কৌশলগত স্থাপনার বিষয়ে তড়িঘড়ি করে বা অস্বচ্ছভাবে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়। তারা দাবি করেন, অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদি নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার রাখে না। এ ধরনের সিদ্ধান্ত জনগণের গণআকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী এবং জনরোষ আরও বাড়াতে পারে।
মুক্তিজোট শঙ্কা প্রকাশ করে জানায়, বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া ও রোহিঙ্গাদের স্থায়ী অবকাঠামো তৈরির অনুমোদন দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি তৈরি করবে। তারা সরকারকে সতর্ক করে বলেন, গোপন সমঝোতা বা দরপত্রবিহীন অবৈধ চুক্তির মাধ্যমে বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব হস্তান্তর করা হলে ব্যাপক জনঅসন্তোষ সৃষ্টি হবে, যার দায় সম্পূর্ণভাবে সরকারের ওপর বর্তবে।
সরকার সম্প্রতি দুটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থাপনা চুক্তি সই করেছে। চট্টগ্রামের লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনা করবে,ডেনমার্কভিত্তিক এপিএম টার্মিনালস, যার মেয়াদ ৩০ বছর।
পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনা করবে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক মেডলগ, যার মেয়াদ ২২ বছর।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ১০ বছর দুই প্রতিষ্ঠানই ১০০ শতাংশ করমুক্ত সুবিধা পাবে।
রোহিঙ্গাদের জন্য স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ অনুমোদন একইসঙ্গে বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহায়তায় বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)–এর মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে।
১৮ নভেম্বর সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালাহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
মুক্তিজোট সরকারের কাছে দাবি জানায়,
দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তিগুলো অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
বিদেশিদের কাছে বন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব হস্তান্তরের পদক্ষেপ থেকে সরে আসতে হবে।
রোহিঙ্গাদের স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
অন্যথায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর গণ–আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে সংগঠনটি।