আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:
বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫ ইং ১২:০১ পিএম.কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা থানার ভেতরে বাদীকে লাথি মারা এবং স্যান্ডেল দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশের উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে। আজ বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে কচাকাটা থানার একটি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর।
তবে কথা-কাটাকাটির কথা স্বীকার করলেও মারপিটের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই (নিরস্ত্র) মামুনার রশিদ। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও (ওসি) অভিযোগের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
মারপিটের শিকার মামলার বাদী হোসেন আলী বলেন, জমি নিয়ে মারপিটের ঘটনায় কুড়িগ্রাম আদালতে গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রতিপক্ষের ৯ জনকে অভিযুক্ত করে মামলার আবেদন করেন তিনি। তদন্ত আসে কচাকাটা থানায়। ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হন থানার এসআই (নিরস্ত্র) মামুনার রশিদ। তিনি ২১ জুন আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে একজন অভিযুক্ত রেখে বাকি ৮ জনকে বাদ দেন।
বাদী অভিযোগ করেন, 'গতকাল (বুধবার) দুপুরে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি আমাকে প্রথমে লাথি; পরে স্যান্ডেল দিয়ে পেটাতে পেটাতে থানা থেকে বের করে দেন। মারপিটের সময় দু-তিনজন পুলিশ সদস্য থানার ভিতরে অবস্থান করছিল; কিন্তু তারা এগিয়ে আসে নাই। গেটে থাকা মহিলা সেন্ট্রি এমন অবস্থা দেখে আমাকে চলে যেতে বলেন। তবে এ সময় ওসি তাঁর কক্ষে ছিলেন না।’
হোসেন আলী আরও জানান, কচাকাটা ইউনিয়নের ইন্দ্রগড়ে জমির বিরোধে ৬ ফেব্রুয়ারি হামলার শিকার হন তিনি, তার বাবাসহ কয়েকজন। পরে তিনি বাদী হয়ে কুড়িগ্রাম আদালতে নাজিরুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান, নুরুল ইসলাম, শাহিনুর বেগম, আলপনা বেগম, ফেরেজা খাতুন, সাইফুর রহমান ও স্বপ্না আকতার—মোট ৯ জনকে অভিযুক্ত করে মামলার আবেদন করেন। এসআই মামুনার রশিদ তদন্ত প্রতিবেদন সময়মতো পাঠাতে গড়িমসি করেন। পরে সময় বাড়িয়ে বিবাদীপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে মামলা থেকে ৮ জনকে বাদ দিয়ে শুধু একজনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন পাঠান। অথচ মামলার প্রতিবেদন শক্ত করে দেওয়ার কথা বলে তার (হোসেন) কাছ থেকে দুই দফায় ১০ হাজার টাকা ঘুষ নেন তদন্ত কর্মকর্তা। বিষয়টি জানতে চাওয়ায় তিনি মারপিট করেন।
বাদী বলেন, ‘মারপিটের ঘটনাটি আমি থানার গেটে এসে মানুষজনকে জানালে এসআই মামুনার রশিদ আমাকে ফোন দেন এবং থানার ওসির বরাদ দিয়ে আবার থানায় ডাকেন। কিন্তু ভয়ে আবার থানায় যেতে আমি সাহস পাইনি।’
মার খেয়ে কাঁদছিলেন ভুক্তভোগী বাদী। ছবি: সংগৃহীত
মার খেয়ে কাঁদছিলেন ভুক্তভোগী বাদী। ছবি: সংগৃহীত
ওই ঘটনার সময় থানার ভেতরে নামাজঘরে নামাজ পড়ছিলেন স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের আরসিএম আতাউর রহমান। তিনি বলেন, ‘নামাজ পড়া অবস্থায় মারপিটের দুমধাম শব্দ পাই। নামাজ শেষে গেটে এসে দেখি, একজন লোক কাঁদছেন এবং মারপিটের বিষয়টি বলছেন। তাঁর শরীরে স্যান্ডেলজাতীয় কিছু দিয়ে মারার আঘাত দেখাচ্ছেন।’
তবে এসআই মামুনার রশিদ মারপিটের ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, ‘মামলার বাদী বিভিন্ন সময় মামলা নিয়ে বিরক্ত করতেন। আজ থানায় এসে আমার সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে তাঁর সাথে একটু কথা-কাটাকাটি হয়েছে মাত্র। পরে তিনি চলে গেছেন। এর বেশি কিছু না।’
কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নাজমুল আলম দাবি করেন, ‘আমি অফিসে ছিলাম। এ রকম কিছু ঘটেছে বলে জানি না। আমার অন্যান্য পুলিশ সদস্যও জানেন না। তবে এসআই মামুন আমাকে জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি তাঁর মামলার খোঁজখবর নিতে এসেছিলেন। তদন্তে আট আসামিকে বাদ দেওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ আচরণ করেছেন। এবং বের হয়ে মোবাইলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। আমাদের সিসি ক্যামেরা আছে, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে কি না, তা চেক করলেই পাওয়া যাবে। আমার মনে হয় এ রকম কোনো ঘটনা ঘটে নাই।’
প্রকাশক ও সম্পাদক এস এম হৃদয় ইসলাম নির্বাহী সম্পাদক মো: আবদুল আলীম, প্রধান সম্পাদক সৈয়দ মো: ইউসুফ, বার্তা সম্পাদক, আহসান হাবিব রিপন, মফস্বল সম্পাদক মো: মিজানুর রহমান, আইন উপদেষ্টা, এডভোকেট মো: ফয়জুল করিম, ঠিকানা,:৭৮মতিঝিল বা/এ ঢাকা১০০০। মোবাইল: ০১৫৩৮-২৪২০২৯
© All rights reserved © 2024 71 bangla barta